Posts

Showing posts from January, 2024

পাহাড় পুজো : কানাইসর / বিচিত্র গুপ্ত

Image
পাহাড় পুজো : কানাইসর @ বিচিত্র গুপ্ত স্থানীয় সঙ্গীত,সাহিত্য,কৃষ্টি,সংস্কৃতি ,আবেগ ,অনুভূতি ,উন্মাদনা ,ভালোবাসা ,প্রেম তথা ঐতিহ্য ও বংশানুক্রমিক পরম্পরা হিসাবে প্রকৃতি পুজোর যে বিশ্বজনীন ইতিহাস বহমান, তা এই অঞ্চলের মানুষের কাছেও অনুসৃত হয়ে আসছে স্মরণাতীত  কাল ধরে, পাহাড় পুজো তারমধ্যে  অন্যতম। এই  পরম্পরা অনুসরন করেই,প্রতি বছর আষাঢ় মাসের তৃতীয় শনিবার, ঝাড়গ্রাম জেলার বিনপুর দুই নম্বর সমষ্টি উন্নয়ন অঞ্চলের অন্তর্গত সন্দাপাড়া গ্রামপঞ্চায়েতের অধীনে, পশ্চিমবঙ্গ  ও ঝাড়খন্ড রাজ্যের  মধ্যবর্তী সীমানায় অবস্থিত, কানাইসর পাহাড়কে কেন্দ্র করে যে প্রকৃতি পুজোর আয়োজন  হয়, সেটাই কানাইসর পাহাড় পুজো নামে পরিচিত। কেউ কেউ বলেন কানাইশর/ কানাইশহর পাহাড় পুজো।।  ভারত বর্ষের পাঁচ রাজ্য যথা পশ্চিম বঙ্গ, ঝাড়খন্ড , বিহার, ছত্রিশগড় ও উড়িষ্যা জুড়ে বিস্তৃত ছোট নাগপুর নামক যে মহাদেশীয় মালভূমি অবস্থান করছে, তারই অন্তর্গত একটি নাতিউচ্চ পাহাড় এই কানাইশর। সমুদ্র পৃষ্ট থেকে এর উচ্চতা আনুমানিক ৩০০ মিটার থেকে ৩৩০ মিটার অর্থাৎ ৯৮৫ ফুট থেকে ১০৮৩ ফুট।মূলত গ্রানাইট , নিস, হ...

হুদহুদি নামের জলপ্রপাত, বেলপাহাড়ী @ বিচিত্র গুপ্ত

Image
হুদহুদি নামের জলপ্রপাত, বেলপাহাড়ী @ বিচিত্র গুপ্ত বর্ষারজল  পাহাড় উপত্যকার ঢাল বেয়ে নেমে সরু সরু জলপ্রবাহের সৃষ্টি করে , এবং সেই জল দ্রুত অপেক্ষাকৃত ঢালু জায়গা দিয়ে ' হদ হদিয়ে ' নিচে নেমে যায়। লোকাল শব্দ ' হদহদি বা হুদহুদি ' এর অর্থ  যেভাবে জল সশব্দে হুড়মুড়িয়ে প্রবল বেগে নিচের দিকে নেমে যায় ।বেলপাহাড়ীর ঢাঙিকুসুম গ্রামে  '  বড় পাহাড়ের ' পাদদেশের জঙ্গলের মধ্যে  ' আমলাশোল ও ঢাঙিকুসুম ' মৌজার মধ্যবর্তী   স্থানে পাথরের বুক চিরে যে জলপ্রপাত তার নাম হয়েছে ' হুদহুদি/ হদহদি ' জলপ্রপাত। জঙ্গল ঘেরা ডুংরি ( জন মানব শূন্য ছোট্ট পাহাড় কে এই নামেই স্থানীয় মানুষজন অবিহিত করে ) এর মাঝে এই জলপ্রপাত সৃষ্টি হয়েছে বলে অনেকে এটাকে ' ডুংরি ' জলপ্রপাত নামেও ডেকে থাকে। ২০১৮ সালের আগে পর্যন্ত এই স্থানটি ঝাড়গ্রাম পর্যটন মানচিত্রে ব্রাত্য থেকে গেছিলো।  তবে  শিমুলপাল গ্রাম পঞ্চায়েতের ঢাঙিকুসুম গ্রাম ' পাথর শিল্পী দের গ্রাম 'নামে বেশ পরিচিত ছিলো। পর্যটক দের আগমনে মৃতপ্রায় পাথর শিল্প পুনরায় চাঙ্গা হয়ে উঠেছে।বর্তমানে এই গ্রামে আগত পর্যটক...

ঘাগরা // বিচিত্র গুপ্ত

ঘাগরা / বিচিত্র গুপ্ত স্থানীয় শব্দ ' গাগরি/ গাগর ' থেকে ' ঘাগরা ' শব্দটি এসেছে। গাগর/গাগরি শব্দের অর্থ কলসি বা ঘড়া। বেলপাহাড়ীতে ঘাগরা নামের যে অত্যন্ত জনপ্রিয় পর্যটন স্থানটি রয়েছে,সেটি মূলত প্রাগৈতিহাসিক নদী তারাফেনীর বুকে অবস্থিত। তারাফেণী নদীর প্রবল জল স্রোতের ঘূর্ণিতে বিস্তীর্ণ পাথুরে ভূ- খন্ড ক্ষয়ে ক্ষয়ে কলসির আকারের ভূমিরূপ তৈরি করেছে। নদীর গতিপথের উচ্চ প্রবাহে তৈরি যে ভূমিরূপ আসলে Pot Hol বা মন্থ কূপ নামে পরিচিত , এই ঘাগরার ভূমিরূপ ঠিক তাই। এখানে গভীর শাল গাছের জঙ্গলের মধ্যে দিয়ে নদী ইংরেজি S এর আকার নিয়েছে। পাথরের মধ্যে দিয়ে প্রবাহিত হতে গিয়ে বাঁধা প্রাপ্ত হয়ে তৈরি হয়েছে একটি অতি সুন্দর নাতি উচ্চ জলপ্রপাতের। বর্ষা কিংবা বর্ষা পরবর্তী কয়েক মাস এর রূপ সর্বোত্তম জায়গায় পৌঁছয়। ব্রিটিশ ভারতে এই মনোরম স্থানটি বেলপাহাড়ী র নীলকর সাহেবদের অবসর কাটানোর এবং বহিরাগত বিদেশি বন্ধু বান্ধবদের নিয়ে বনভোজন করার জায়গা । আজ থেকে প্রায় ১৪০ বছর আগে এখানকার নীলকুঠির নীলকর সাহেব ফ্রেডরিক রাইজ বারোজ বর্ষা শেষ হলে ঘোড়ায় চেপে শাল জঙ্গলের মধ্যে দিয়ে বড়শোল - জাম...